গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের পুলিশ রেকর্ড খাতায় রোগীর মেডিকেল রেকর্ড টেম্পারিং করে গুরুতর সার্টিফিকেট দিয়ে নিরীহ লোকদের ফাঁসানোর চাঞ্চল্যকর অভিযোগ পাওয়া গেছে। সরজমিন তদন্তে এর সত্যতা পাওয়া যায়। শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল ঘিরে গড়ে উঠেছে একটি জাল মেডিকেল সর্টিফিকেট চক্র। এই চক্রের দেওয়া জাল মেডিকেল সার্টিফিকেটের উপর ভিত্তি করে নিরীহ ভুক্তভোগীদের জেল ও জরিমানা হতে পারে। এই অপরাধের সঙ্গে খোদ হাসপাতালের কর্মচারীরা জড়িত থাকার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। অনুসন্ধানে জানা গেছে, হাসপাতালের জরুরী বিভাগের রোগী রেজিস্টার খাতায় হাসপাতালের একজন কর্মচারীর যোগসাজসে অন্য রোগীর মেডিকেল রেকর্ডে রোগীর নাম-ঠিকানার অংশ ফ্লুইড দ্বারা ঢেকে দিয়ে জনৈক মো. ফারুক মিয়ার নাম-ঠিকানা বসিয়েছে। এই সূত্রে মেডিকেল সার্টিফিকেট দেওয়ার চেষ্টা চলছিল, যাতে টেম্পারিং মেডিকেল সার্টিফিকেটের উপর ভিত্তি করে প্রতিপক্ষের দীর্ঘমেয়াদী জেল ও জরিমানা হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ওই টেম্পারিং করা মেডিকেল রেকর্ডের ভিত্তিতে জনৈক ফারুক মিয়া গাজীপুর মহানগরের কাশিমপুর থানাধীন এনায়েতপুর গ্রামের ইদ্রিস আলী ও রমজান আলীসহ আরও অজ্ঞাত ৪/৫ জনের নামে গত ২২ অক্টোবর তারিখে গাজীপুর সদর মেট্রো থানায় অভিযোগ একটি মামলা দায়ের করে। সদর থানা মামলা (নম্বর: ৫০/৪১৩)।
মামলার অভিযোগপত্র ও প্রাথমিক তথ্য বিবরণী অনুযায়ী মো. ফারুক মিয়া গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কাশিমপুর থানার পূর্ব এনায়েতপুর গ্রামের বাসিন্দা। তার পিতার নাম আব্দুল হেকিম।শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মো. রফিকুল ইসলাম জানান, বিষয়টি তার নজরে এসেছে।। তিনি তার অফিস কক্ষে পুলিশ রেকর্ড খাতা সাংবাদিকদের দেখান। এ সময় টেম্পারিংয়ের কথা স্বীকার করে ডা. মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, “দেখলাম যে ফ্লুইড লাগানো আছে। এটা ফ্লুইড দিয়ে ওভারল্যাপিং করা আছে এইটা সত্যি কথা। পুলিশ খাতায় ফ্লুইড দিয়ে ঘষামাজা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য না। এটা বড় ধরণের অপরাধ। এটা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। অবশ্যই এর জন্য ব্যবস্থা নেয়া হবে।”ব্যপক অনুসন্ধানে জানা যায়, অত্র হাসপাতালের এসএসএম মফিজ উদ্দিন এ ঘটনার সাথে জড়িত। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মকর্তা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এদিকে মামলার প্রধান আসামী ইদ্রিস আলীকে পুলিশ গত সোমবার তার বাসা থেকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে জেল-হাজতে প্রেরণ করে।