গাজীপুরের কালীগঞ্জে ভোগদখলীয় সম্পত্তি জোরপূর্বক দখলের উদ্দেশ্যে রাতের অন্ধকারে ভেকু দিয়ে পুকুর খননের অভিযোগে থানায় ডায়েরী। কাজ অব্যাহত।
সরেজমিনে জানা যায়, উপজেলার নাগরী ইউনিয়নের তালিয়া মৌজার আর এস ১১নং খতিয়ানের ১৬১ ও ১৫৬ নং দাগে রেকর্ডীয় মালিক জামিলা খাতুন, মোহাম্মদ আলী, জৈনদ্দিন ও ছমির উদ্দিন এর ওয়ারিশগণ পৈত্রিক, মাত্রিক ও ক্রয়কৃত সম্পত্তির মালিক হয়ে যুগ যুগ ধরে শান্তিপূর্ণভাবে ভোগ দখলে রয়েছেন। স্থাণীয় জব্বার মীরের ছেলে আহসান, হাসমত উল্লাহ, নুরুল হক মীরের ছেলে মাহবুবুর রহমান, হাসান ও আহাম্মদ আলীর ছেলে আব্দুল মালেক ও ইসমাইল উক্ত সম্পত্তি দখলের উদ্দেশ্যে গত ১৮ অক্টোবর জমির বাউন্ডারী ওয়াল নির্মাণের কাজ শুরু করেন। আর এস রেকর্ডীয় মালিক জামিলা খাতুনের ছেলে আমির হোসেন গত ১৯ অক্টোবর কালীগঞ্জ থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। থানার এস আই মো. রফিকুল ইসলাম লিটন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সত্যতা পান। এ বিষয়ে গত ২৫ অক্টোবর থানায় ৬০৮নং সাধারণ ডায়েরী করেন। বিবাদীগণ তাতে ক্ষীপ্ত হয়ে গত ৯ নভেম্বর রাতে পরিকল্পিত ভাবে ভেকুসহ ৫০/৬০জন অজ্ঞাত লোক নিয়ে জমিতে অনাধিকার প্রবেশ করে বিভিন্ন প্রজাতির ৪/৫টি গাছ ভেঙ্গে মাটি কাটা শুরু করেন। তাদের বাধা দেওয়ার পরও সন্ত্রাসী কায়দায় রাতারাতি জমিতে পুকুর খনন করে ফেলেন। পরে পুলিশ গিয়ে তাদের কাজ বন্ধ রাখতে বলেন। কিন্তু তারা আইনকে অমান্য করে তাদের কাজ চালিয়ে যান।
এ বিষয়ে মো. আমির হোসেন ও রুস্তম আলী বলেন, আমরা উপজেলার নাগরী ইউনিয়নের তালিয়া গ্রামের মৃত মানিক মীর, জামিলা খাতুন ও মোহাম্মদ আলী মীরের ওয়ারিশ। জামিলা খাতুন তালিয়া মৌজার এস এ ১৮ নং খতিয়ানে রেকর্ডীয় মালিক দেওয়ান আলীর ওয়ারিশগনের নিকট থেকে বিগত ২ নভেম্বর ১৯৭৮ইং তারিখে সাফ কবলা ৬৬৬৫ নং দলিল মূলে ক্রয় সূত্রে এবং আর এস ১১নং খতিয়ানের রেকর্ডীয় ১২৩ শতাংশ সম্পত্তির মালিক হন। মৃত জামিলা খাতুনের সম্পত্তিতে মুনসুর আলী মীর, আবুল হোসেন মীর, আমির হোসেন, দুলাল মীর ও রহিমা খাতুন ওয়ারিশ সূত্রে মালিক হই। অন্যদিকে মৃত মোহাম্মদ আলী মীর একই খতিয়ানের রেকর্ডীয়, পৈত্রিক ও ৬টি দলিল মূলে ৭৬.২৩ শতাংশ সম্পত্তির মালিক হন। উক্ত সম্পত্তি আমি (রুস্তম আলী মীর গং) ভোগ দখলে আছি। কিন্তু স্থাণীয় হাসমত উল্লাহ, ইসমাইল হোসেন ও মালেক গত ১৮ অক্টোবর ও ৯ নভেম্বর অজ্ঞাত ৫০/৬০জন ভাড়াটিয়া লোক নিয়ে রাতের অন্ধকারে আমাদের জমিতে অনাধিকার প্রবেশ করে ভেকু চালিয়ে রাতারাতি পুকুর খনন করে ফেলেন। তাদের কাজে বাধা দিলে আমাদের বিভিন্ন প্রকার ভয়ভীতি প্রদর্শন করে। এ বিষয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরী করেছি।
অভিযুক্ত হাসমত উল্লাহ ও ইসমাইল হোসেন মীর বলেন, আব্দুল জব্বার মীর তালিয়া মৌজার আর এস ১১নং খতিয়ানের ১৫৬নং দাগে রেকর্ডীয় ও ক্রয়সূত্রে ১২.১৫ শতাংশের মালিক হন। তার সম্পত্তিতে ওয়ারিশ সূত্রে মালিক হয়ে ১২ শতাংশ জমি ভোগ দখলে আছি। এবং একই খতিয়ানের রেকর্ডীয় মালিক মৃত আহাম্মদ আলী ১৬১ নং দাগে রেকর্ডীয় ও নুরুল হক মীরের ছেলেদের নিকট থেকে ক্রয়সূত্রে মোট ৩০.৬৬ শতাংশ সম্পত্তির মালিক হন। উক্ত সম্পত্তি হতে আমি (ইসমাইল মীর) বর্তমানে ২৭ শতাংশ সম্পত্তি ভোগ দখলে আছি। তারা ভূয়া কাগজপত্র তৈরী করে তাদের প্রাপ্যতার চেয়ে বেশি জমি দখলে আছেন। এ বিষয়ে আমরা (হাসমত উল্লাহ মীর ও ইসমাইল হোসেন মীর) বিজ্ঞ গাজীপুর আদালতে ৫৬৪/২৩ ও ১৫০৭/২৩ নং মোকদ্দমা দায়ের করেছি।
এ বিষয়ে স্থাণীয় ইউপি সদস্য মো. এন্তাজ মিয়া জানান, জমি সংক্রান্ত সমস্যা নিয়ে একাধিকবার স্থাণীয় গন্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে সালিশ দরবার হয়েছে। কাগজপত্র পর্যালোচনা করে আমরা যতটুকু পেয়েছি মুনসুর আলী গং তাদের প্রাপ্য জমি দখলে আছেন। হাসমত উল্লাহ ও ইসমাইল হোসেন তাদের নিজেদের জমিতেই কাজ করছেন।
এ বিষয়ে কালীগঞ্জ থানার এস আই মো. রফিকুল ইসলাম লিটন বলেন, অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।