গাজীপুরের কালীগঞ্জে কৌশলে বোনের সম্পত্তি লিখে নিয়ে পাগল সাজিয়ে নির্যাতনের অভিযোগে মামলা দায়ের করা হলেও আসামীরা ধরা ছোয়ার বাইরে। আসামীদের আটক করতে বিকাশে টাকা নিলেও আসামী পক্ষের মোটা অংকের টাকায় তাদের সাথে খোশ গল্প করে চলে আসার অভিযোগ উঠেছে তদন্ত কর্মকর্তা এস আই মো. রেজাউল করিম এর বিরুদ্ধে।
জানা যায়, উপজেলার মোক্তারপুর ইউনিয়নের বড়হড়া গ্রামের মৃত রমিজ উদ্দিনের কন্যা কাউছার বেগমের (৬৩) ৩ বিঘা সম্পত্তি ভাই আশরাফুল ও তার স্ত্রী নাজমুন নাহার স্বপ্না বেগম কৌশলে তাদের পুত্র নাইমের নামে লিখে নেন। পরে বোনকে পাগল আখ্যা দিয়ে লোহার শিকলে হাত পা বেধে ঘরের ভিতরে আটকে রাখে। শনিবার (৯ ডিসেম্বর) সকালে আশরাফুল ভুইয়া ও তার স্ত্রী কাউছার বেগমকে গাছের সাথে শিকল দিয়ে বেধে পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। বিষয়টি এলাকাবাসীর নজরে এলে তাকে উদ্ধার করে কালীগঞ্জ সরকারী হাসপাতালে ভর্তি করে। রবিবার (১০ ডিসেম্বর) দুপুরে কাউছার বেগমের মেয়ে শারমিন বেগম বাদী হয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ দিলে রাতেই তা এফ আই আর ভূক্ত হয়। যার নং ১০(১২)২৩। তদন্ত কর্মকর্তা আসামী আটকের আশ্বাসে বাদীর আত্মীয়র নিকট থেকে বিকাশের মাধ্যমে টাকা গ্রহণ করেন। কিন্তু সোমবার (১১ ডিসেম্বর) বিকেলে এস আই মো. রেজাউল করিম আসামীদের বাড়তে যান এবং মামলায় এজাহারভূক্ত ২নং ও ৪নং আসামীকে বাড়ীতে পেয়ে ঐশরিক করণে আটক না করে খোশ গল্প করে চলে আসেন। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
এ বিষয়ে মামলার বাদী শারমিন বেগম বলেন, আমি মামলা সংক্রান্ত বিষয়ে তদন্ত কর্মকর্তাকে ফোন দিলে তিনি আমার সাথে খারাপ আচরন করেন। তিনি জানতে চান আমি ১নং আসামী আশরাফুল ভূইয়াকে (আমার মামা) ছাড়া অন্য ৪ জনকে কেন এজাহারে আসামী করেছি। আমি জানাই আমার মামা, মামী ও মামত ভাই ও বোন সহযোগে আমার মাকে নির্যাতন করেছে। ৫নং আসামী আমার মায়ের নিকট থেকে জমি আত্মসাৎ দলিলের স্বাক্ষী হয়েছেন। তিনি আমার মামাত ভাই মাহবুব এর কাছ থেকে আসামী ধরতে বিকাশের মাধ্যমে টাকা নিয়েছেন।
এ বিষয়ে কালীগঞ্জ থানার এস আই মো. রেজাউল করিম বাদী ফোন দেওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, বাদী দেশব্যাপী সবাইকে আসামী দিতে পারে। আমি তদন্ত করে যাকে পাব তাকেই ধরব। পরে ঘটনাস্থলে গিয়ে আসামী আটক না করার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ২নং ও ৪নং আসামীর সাথে কথা বলেছি। তারা বলেছেন ঘটনার সাথে জড়িত না। তাই তাদের আটক করা হয়নি। পরে মাহবুব এর নিকট থেকে বিকাশের মাধ্যমে টাকা নেওয়ার কথা জানতে চাইলে ফোনটি কেটে দেন।
এ বিষয়ে কালীগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) রাজীব চক্রবর্তী বলেন, মামলায় এজাহার নামীয় আসামী আটক না করার ঘটনাটি শুনেছি। সিনিয়র অফিসারদের সাথে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।