নরসিংদী পলাশের ঘোড়াশাল পৌর এলাকার দলাদিয়ায় জমে উঠেছে কুঞ্জমেলা। কুঞ্জমেলা ৩দিন ব্যাপী শুরু হয়েছে। মাঘের ২১ থেকে ২৩ পর্যন্ত চলবে এই মেলা। হিন্দু ধর্মীয় নন্দোৎসব হরেনাম কীর্তণকে উপলক্ষ করে এই মেলা উৎসব। প্রতি বৎসরই ১৫দিন ব্যাপী রাধাকৃষ্ণ এর নামে কীর্ত্তণ উপাসনা শেষে, পৌষ বা মাঘের কোন এক তারিখে এ কুঞ্জমেলা অনুষ্ঠিত হবার দীর্ঘদিনের রীতি। এবার শুরু হয়েছে মাঘের ৩য়: সপ্তাহে।
এইদিন হিন্দু সনাতন ধর্মালম্বীগনের বহু পুরানো রাধা কৃষ্ণের মিলন নামজজ্ঞ শুরু হয়। মানব শান্তি কল্যাণের আরাধনায় নানা বয়সের হরিভক্তগন তাদের মানত্ ও প্রসাদ বিতরন করে মনের আরতি দান করে থাকে। রাঁধা কৃষ্ণের মিলন তিথির আয়োজন ছাড়াও এদিন ভক্তগন শিবঠাকুর ও কালী দেবতার প্রতিও তাদের ভক্তিপূর্ণ পুজো নিবেদন করে থাকেন।
এ সময় কুঞ্জমেলা পরিদর্শন করেন ঘোড়াশাল পৌর মেয়র আল মুজাহিদ হোসেন তুষার,আসন্ন পলাশ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে উপজেলা আওয়ামী লীগের মনোনীত চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী মোঃ শরিফুল হক,উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি অসিত চন্দ্র দাস, সাধারণ সম্পাদক সুব্রত কুমার দত্ত শুভ,ঘোড়াশাল পৌর পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বিজয় বনিক লুকু, জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক পপি রানী সাহা প্রমুখ।
সরজমিনে আজ সোমবার ৫ ফ্রেব্রুয়ারী দুপুরে মেলা প্রাঙ্গন ঘুরে দেখা গেছে, বহুসংখ্যক দোকানী মেলায় বেচাবিক্রির জন্য নানা রঙের পণ্য সাজিয়ে তারা বসেছে। বেলা গড়িয়ে বিকাল হলেই অন্যদিনের মতো মেলা দর্শনার্থীর সংখ্যা বেড়ে উঠবে। তখনই শুরু হবে দোকানীদের বিক্রির ধুম। ছোটদের খেলনা, মেয়েদের চুড়ি, কিশোর ছেলেদের জন্য হরেক রকমের প্লাস্টিক গাড়ি, বাঁশি, বড়দের জন্য রান্নাবান্নার তৈজসপত্রের দোকান সারিসারি বসেছে।
মেলায় ফোটকা বেলুন বিক্রেতা হরছুল মিয়ার সাথে কথা হল, সে আমাকে জানান অনান্য বছরের মতো এবারো সে এই মেলাতে ৩দিন থাকবে। তবে এবার আশংকা অন্য বছরের চেয়ে বেঁচা বিক্রি কম হবে। ঠিক মুড়লি বেপারী মিনহাজ জানায় এবার বেচাবিক্রি কম হবারই শংকা। হরিপদ ঘোষ শুধু বলেছে তার মিষ্টিই বেঁচাবিক্রি ঠিকই হবে। তবে সকল দোকানীই এবার খুশী আবহাওয়া ভালোর কারনে। মেঘ বৃষ্টি নাই। মেলায় অবস্থানে দুর্ভোগ পোহাতে হবেনা।
দলাদিয়া মন্দির পরিচলনা কমিটির সভাপতি স্বপন মিত্র জানান, এই পৌরাণিক মেলা আমাদের সনাতন ধর্মীয়ের কাছে খুব পূণ্যের। এটি যেমন প্রার্থনার তেমনি আনন্দের ও উৎসব।
এসময় আশপাশ, দূর-দুরান্তের সব মানুষের কাছে একটি মিলনমেলা হিসেবে চিহ্নিত। এসময় সবার বাড়িতে বিশেষ করে মেয়ে ও জামাইদের আগমন ঘটে। দূরদুরান্ত থেকে নিমন্ত্রিত অতিথিদের ভিরে বাড়ি সরগরম হয়ে উঠে।
তাছাড়া এ সময় সবার বাড়িতে বিশেষ মাছ মাংসসহ উন্নত খাবার আয়োজন থাকে। নাড়ু মুড়ি মুরকি তো আছেই। সব মিলে অত্র অঞ্চলের মানুষ এই কুঞ্জমেলা ঘিরে সপ্তাহ ধরে সব বয়সের মানুষজন এক অন্যরকম অনাবিল আনন্দে মেতে ওঠেন। তাই তারা এই মেলার জন্য বছরজুড়ে অধীর আগ্রহে অপেক্ষায় থাকে।