১৭ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে নরসিংদী জেলা আওয়ামীলীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন। সম্মেলনকে ঘিরে মুখোমুখি অবস্থানে অভ্যন্তরীণ কোন্দলে জর্জরিত জেলা আওয়ামী লীগের দুই পক্ষ।এছাড়া পদপ্রত্যাশী নেতারা বিভিন্ন পন্থায় লবিং গ্রুপিং শুরু করেছেন কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগ নেতৃবৃন্দের কাছে।জেলার বিভিন্ন উপজেলায় তৃণমূল নেতাকর্মীদের মধ্যেও শুরু হয়েছে জেলার শীর্ষ পদে কে বসছেন এ নিয়ে জল্পনা-কল্পনা। আসন্ন এই সম্মেলনের মাধ্যমে জেলা আওয়ামীলীগের আভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব ও কোন্দলের অবসান হবে?না কী আরও বাড়বে এমন শঙ্কা তৃণমূল কর্মীদের। এদিকে সম্মেলনকে ঘিরে নরসিংদীর বিভিন্ন সড়ক সেজেছে প্রার্থীদের ব্যানার, ফেস্টুন, তোরণে।এছাড়া নরসিংদী মুসলেহ উদ্দিন ভূইয়া স্টেডিয়ামে রঙিন সাজে সাজানো হচ্ছে সম্মেলন মঞ্চ। ইতোমধ্যে সম্মেলনের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে দলটি।দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে,এক যুগ পর ২০১৫ সালের ১৪ জানুয়ারি নরসিংদী জেলা আওয়ামীলীগের সর্বশেষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।এতে বর্তমান সংসদ সদস্য মোঃ নজরুল ইসলাম হিরু সভাপতি, আব্দুল মতিন ভূঁইয়া সাধারণ সম্পাদক।পরে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের দ্বন্দ্বে দুই ভাগে বিভক্ত জেলা আওয়ামীলীগ।পৃথকভাবে পালন হয় বিভিন্ন কর্মসূচী।এই দ্বন্দ্বের জেরে ২০২০ সালের নভেম্বরে সভাপতি মোঃ নজরুল ইসলাম হিরু ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মতিন ভূঁইয়াকে অব্যাহতি দেয় কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগ। সে সময় সহ সভাপতি জিএম তালেব হোসেনকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পীরজাদা কাজী মোহাম্মদ আলীকে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেয়া হয়।তবে আসন্ন সম্মেলনে পরিচ্ছন্ন ও যোগ্য নেতৃত্বের হাতে দলের দায়িত্বের মাধ্যমে দলের চলমান সংকট নিরসন চান দলটির নেতা-কর্মীরগণ। তৃণমূল নেতাকর্মীগণ জানান,দীর্ঘদিন ধরে জেলা আওয়ামীলীগের দুই ভাগে বিভক্ত থাকার কারণে প্রভাব পড়েছে জেলা কমিটি ও উপজেলা কমিটিসহ তৃণমূল পর্যায়ে। মূলত জেলার পদ বঞ্চিত কিছু নেতা একটি প্লাটফর্মে ও পদ বহাল নেতারা তাদের নিজ বলয়ে দলীয় রাজনীতি ও কর্মকান্ড পরিচালনা করে আসছেন।তাদের এই বিভক্তির রাজনীতির কারণে প্রভাব পড়েছে ছাত্রলীগ,যুবলীগসহ অন্যান্য অঙ্গ সংগঠনেও।তৃণমূলের যেসব নেতাকর্মীরা কোন্দলের রাজনীতি পছন্দ করেন না তারাও বাধ্য হয়ে জেলার কোন্দলের রাজনীতির কারণে বিভক্ত হয়ে পড়েছেন।শীর্ষ নেতৃবৃন্দ তাদের পছন্দের নেতাকর্মী দিয়ে কমিটি গঠন করায় অনেকে অবমূল্যায়িত হয়েছেন।দীর্ঘদিন ধরে তৃণমূলের ত্যাগী নেতাকর্মীদের অবমূল্যায়ণের ফলে অনেকে রাজনীতি বিমুখ হয়ে নীরব হয়ে পড়েছেন। দলের প্রায় প্রতিটি কর্মী কারও না কারও অনুসারী হয়ে রাজনীতিতে সম্পৃক্ত রয়েছেন।এতে দলীয় কোন্দল, দ্বন্দ্ব অনেকটাই প্রকাশ্য রূপ ধারণ করায় রাজনৈতিক অঙ্গণে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে দলটি।এদিকে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের পদ দখল নিতে মরিয়া বিবাদমান দুইটি পক্ষ।শীর্ষ এই দুই পদের জন্য লড়ছেন এক ডজনেরও অধিক নেতা।এখন পর্যন্ত অনেক প্রার্থী নিজে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রার্থিতার কথা ঘোষণা না করলেও দলীয় নেতাকর্মীদের মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়েছে সম্ভাব্য প্রার্থীদের নাম।সম্ভাব্য প্রার্থীদের নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলছে প্রচারণা।সাধারণ সম্পাদক পদে বাংলাদেশ কৃষক লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আমিরুল ইসলাম ভূঁইয়া,জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক হাবিবুর রহমান হাবিব, শিবপুর উপজেলা চেয়ারম্যান হারুনুর রশিদ খান,জেলা যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান খোকন,জেলা যুবলীগের সভাপতি বিজয় কৃষ্ণ গোস্বামী,শহর আওয়ামীলীগের সভাপতি কামরুজ্জামান কামরুল,সাবেক সভাপতি মোন্তাজ উদ্দিন ভুইয়া, নরসিংদী শহর যুবলীগের সাবেক সভাপতি আশরাফুল সরকার,সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আফতাব উদ্দিন ভুইয়া,কেন্দ্রীয় যুবলীগের কার্যনির্বাহী সদস্য মঞ্জুরুল মজিদ মাহমুদ সাদীসহ আরো অনেকে।নবীণ ও প্রবীণের এই লড়াইয়ে প্রত্যেকেই দলের দায়িত্ব নিতে প্রস্তত বলে জানিয়েছেন তাঁরা। অন্যদিকে সভাপতি পদে চলছে বর্তমান ও সাবেকের লড়াই।বর্তমান ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জিএম তালেব হোসেন চাচ্ছেন ভারমুক্ত হতে।আর সাবেক সভাপতি নরসিংদী সদরের সংসদ সদস্য মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম হীরু চাচ্ছেন আগের পদ ফিরে ফেতে।লড়াইয়ে পিছিয়ে নেই নরসিংদী-৩ আসনের সংসদ সদস্য জহিরুল হক ভূইয়া মোহন ও নরসিংদী-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য কামরুল আশরাফ খাঁন পোটন।
প্রকাশক ও সম্পাদক:মোঃনাজমুল হক মণি
সহকারী সম্পাদক:মোহাম্মদ ইউসুফ
প্রধান কার্যালয়:আশুলিয়া, ঢাকা, বাংলাদেশ
যোগাযোগ: +880 01911121791
© জনগণের বাণী | আইটি সহায়তাঃ সাব্বির আইটি