কারসাজির মাধ্যমে চিনির বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি করা এবং মিল গেটে পণ্যের মূল্য তালিকা প্রদর্শন না করার দায়ে নরসিংদীর পলাশের চরসিন্দুর দেশবন্ধু সুগার মিলস কর্তৃপক্ষকে তলব করে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। এর প্রেক্ষিতে সোমবার (২৪ অক্টোবর) সকালে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামানের কাছে লিখিত জবাব দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।জবাবে সমস্যাগুলো দ্রুত সংশোধন করা হবে বলে অঙ্গীকার করেছে পলাশের চরসিন্দুর দেশবন্ধু সুগার মিলস। যদি সংশোধন না হয় পরবর্তীতে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে হুশিয়ারি করেছেন অধিদপ্তর।বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের নরসিংদীর সহকারী পরিচালক মো. আব্দুস সালাম।জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, কারসাজির কারণে গত কয়েকদিন যাবত চিনির বাজার অস্থিরতার সৃষ্টি হয়েছে। এরই প্রেক্ষিতে শনি ও রবিবার ভোক্তা অধিদপ্তর নরসিংদীর পলাশ উপজেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে দেশবন্ধু সুগার মিলে অভিযান পরিচালনা করা হয়।অভিযানের প্রথম দিন ভোক্তা অধিদপ্তর দেশবন্ধু সুগার মিল গেটে কোনো মূল্য তালিকা পায়নি। প্রতিষ্ঠানটিতে বিদ্যুৎ-গ্যাসের সংকট নেই। তারপরও চাহিদা অনুসারে ডিলারদের চিনি সরবরাহ না দিয়ে ১০ থেকে ১২ দিন পর দিচ্ছে। এর মাধ্যমে কৃত্রিম সংকট তৈরি করছে।অভিযানের দেখা যায়, দেশবন্ধু ব্রাজিল থেকে 'র' চিনি আমদানি করছে। 'র' চিনি প্রক্রিয়াকরণ করে ৫০ কেজির বস্তা করে সরবরাহ করছে। তবে কোম্পানিটির মিল গেটে কোনো মূল্য তালিকা টানানো হয়নি। এমনকি খুচরা বিক্রির জন্য কোনো ছোট প্যাকেট হচ্ছে না। কোম্পানিতে প্রতিদিন ৫০০ টন চিনি উৎপাদিত হচ্ছে। কিন্তু চিনি কেনা-বেচা সংক্রান্ত কোনো তথ্য কারখানায় নেই। কারখানা থেকে জানানো হয়েছে, বনানীতে অবস্থিত প্রধান কার্যালয়ে ক্রয়-বিক্রয় তথ্য/এসও/ডিও সংরক্ষণ করা হয়।অভিযানের দ্বিতীয় দিনে দেখা যায়, দুটি জাহাজে ২০০০ মেট্রিক টন 'র' চিনি রয়েছে। এদিন প্রতিষ্ঠানটিতে মোট ৪৫০ থেকে ৫০০ টন চিনি উৎপাদন হয়েছে। কোম্পানটিতে বিদ্যুৎ-গ্যাসের কোনো সংকট নেই। তারপরও একাধিক এসও-তে চিনি উত্তোলনের নির্ধারিত দিনের ১০ থেকে ১২ দিন পর সরবরাহ করছে। প্রতিষ্ঠানটিতে সারাদেশে ৭০ থেকে ৮০ জন ডিলার রয়েছে।শুধু তাই নয়, পাকা রশিদ বা চালানে একক মূল্য উল্লেখ নেই। রোববার ৪৫০ টন মোট ২৮টি ট্রাকে সরবরাহ করা হয়েছে। মিলের বাইরে ৭০ অধিক ট্রাক পার্কিং আছে চিনি লোড করার জন্য।ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের নরসিংদীর সহকারী পরিচালক মো. আব্দুস সালাম বলেন, আমাদের দুই দিনের অভিযানে যা দেখেছি তাতে মনে হয়েছে কারখানা কর্তৃপক্ষ ইচ্ছাকৃত চিনির কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করছে। তাই তাদেরকে ঢাকায় মহাপরিচালকের নিকট তলব করা হয়। জবাবে সমস্যাগুলো দ্রুত সংশোধন করা হবে বলে অঙ্গীকার করেছে দেশবন্ধু সুগার মিলস। যদি সংশোধন না হয় পরবর্তীতে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে তিনি জানান।জানতে চাইলে দেশবন্ধু সুগার মিলের আবাসিক কর্মকর্তা আরশাদ হোসেন বলেন, অধিদপ্তরের নির্দেশনা পেয়ে ইতিমধ্যে মিল গেটে মূল্য তালিকা টানানো হয়েছে। একই সঙ্গে আমাদের প্রতিদিনের উৎপাদিত চিনিই সরবরাহের কারণে আমাদের মিলে কোন মজুদ নেই। আমরা স্বচ্ছতার জন্য অধিপ্তরের দেয়া নির্দেশনাগুলো বাস্তবায়নে ইতিমধ্যে কাজ শুরু করেছি।
প্রকাশক ও সম্পাদক:মোঃনাজমুল হক মণি
সহকারী সম্পাদক:মোহাম্মদ ইউসুফ
প্রধান কার্যালয়:আশুলিয়া, ঢাকা, বাংলাদেশ
যোগাযোগ: +880 01911121791
© জনগণের বাণী | আইটি সহায়তাঃ সাব্বির আইটি