সদা হাস্যোজ্জ্বল, মিষ্টিভাষী, মানবসেবক ও সাদামনের মানুষ হিসেবে সবার কাছে প্রিয় নরসিংদী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সওগাতুল আলম। ১৯৮০ সালের ২৭ মার্চ কিশোরগঞ্জ জেলার ইটনা থানার অন্তর্গত করনসী গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। তার পিতার নাম মো. ছাইদুর রহমান। তিন ভাই এক বোনের মধ্যে তিনি মা-বাবার প্রথম সন্তান।সওগাতুল আলম সর্ব প্রথম তার গ্রামের বাড়ী জয়সিদ্দী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে কৃতিত্বের সাথে এসএসসি এবং গোরুদয়াল সরকারী কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। পরবর্তীতে তিনি ২০০৪ সালে ঢাকা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে মাস্টার্স ডিগ্রী লাভ করেন। শিক্ষা জীবন শেষ করে ২০০৬ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীতে সরাসরি উপ-পরিদর্শক হিসেবে যোগদান করেন। ইতিপূর্বে তিনি কোথাও চাকরির জন্য ইনটারভিউ দেননি। কর্মজীবনে দেশের বিভিন্ন থানায় সততা,নিষ্ঠা,ত্যাগ ও দক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালন করে পুলিশ বাহিনীর সুনাম বৃদ্ধি করেন। বাংলাদেশ পুলিশের এই গর্বিত সদস্য।তিনি সর্ব প্রথম মাদারীপুর জেলার মাদারীপুর সদর থানায় ভারপ্রাপ্ত অফিসার ইনচার্জ হিসেবে যোগদান করেন। পরবর্তীতে টাঙ্গাইল জেলার কালিহাটি থানার ভারপ্রাপ্ত অফিসার ইনচার্জ এবং সর্বশেষ ২০২১ সালের ২৪ মে নরসিংদী জেলার নরসিংদী সদর মডেল থানায় ভারপ্রাপ্ত অফিসার ইনচার্জ হিসেবে যোগদান করেন। মারদীপুর জেলার মাদরীপুর সদর থানার অফিসার ইনচার্জ হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ, জঙ্গীবাজ ও মাদক কারবারী নির্মূল করে মাদকমুক্ত থানা গড়ে তুলতে অনন্য ভূমিকা রাখার জন্য পরপর দুইবার ঢাকা রেঞ্জের শ্রেষ্ঠ ওসি নির্বাচিত হন এবং ২০১৯ সালে তিনি আইজিপি পদক লাভ করেন।এছাড়াও তিনি টাঙ্গাইল ও মাদারিপুর জেলার শ্রেষ্ঠ ওসি নির্বাচিত হন। এই চৌকস পুলিশ কর্মকর্তা ২০২১ সালের ২৪ মে নরসিংদী মডেল থানায় যোগদান করে মাদকমুক্ত, সন্ত্রাসমুক্ত, অবৈধ অস্ত্রধারী, জঙ্গীমুক্ত ও রাহাজানীমুক্ত করে শান্তির জনপথ হিসেবে নরসিংদী মডেল থানা যেন মানুষের শেষ আশ্রয়স্থল হয় সেই প্রতিজ্ঞা নিয়ে কাজ শুরু করে অতি সংক্ষিপ্ত সময়ে একাধিক মাদককারবারি অবৈধ অস্ত্রধারীকে গ্রেফতার করে কারাগারে প্রেরণ করেন। ওয়ারেন্টভূক্ত পলাতক আসামি গ্রেফতার, অস্ত্র ও বিপুল পরিমাণ গুলি উদ্ধারে সক্ষম হওয়ায় যোগদানের মাত্র এক বছরের মধ্যে নরসিংদী জেলার পুলিশ সুপারের কাছে প্রশংসনীয় হয়ে ওঠেন নরসিংদী মডেল থানা অফিসার ইনচার্জ সওগাতুল আলম।এক প্রশ্নের জবাবে গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, সন্ত্রাস ও মাদক নির্মূলে সরকার যেমন জিরো ট্রলারেন্স, পুলিশ হিসেবে জাতির এই শত্রুদের গ্রেফতার করে মাদক নির্মূলে আমিও জিরো ট্রলারেন্স। তাই নরসিংদী সদর থানাকে মাদক, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ, ভূমিদস্যু, কিশোর গ্যাং, গডফাদারমুক্ত করতে থানা পুলিশের একাধিক টিম কাজ করে যাচ্ছে। অন্যায়কারী যত বড়ই হোক না কেন, কাউকে ছাড় দেবেন না বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন থানার এই অফিসার ইনচার্জ।তিনি আরো বলেন, নরসিংদীতে দেশের শীর্ষ বিদ্যাপিঠ অবস্থিত। আইনশৃংখলা স্বাভাবিক রেখে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ যেন বজায় থাকে সে ভাবে কাজ করে যাচ্ছি। আমি নরসিংদী মডেল থানায় যোগদানের পরে নরসিংদী সদর থানার চরাঞ্চলের করিমপুর, নজরপুর, আলোকবালী, চরদিঘলদী ও বগারগোত গ্রামের প্রভাব বিস্তারকে কেন্দ্র করে প্রতিনিয়ত টেঁটাযুদ্ধ লেগেই থাকত। এতে অনেক লোক নিহত হয়েছে এবং অনেকে পঙ্গুত্ব বরণ করে মানবেতর জীবনযাপন করছে। তিনি যোগদানের পর থেকে বিষয়টি তার নজরে আসে। এ টেঁটাযুদ্ধ বন্ধ করার জন্য তিনি চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেন এবং নরসিংদীর পুলিশ সুপার কাজী আশরাফুল আজীমের নির্দেশনায় অত্যন্ত পরিশ্রমে চরাঞ্চলের টেঁটাযুদ্ধ বন্ধ করেছেন এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে শান্তি ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হন।এছাড়া তিনি ইউপি নির্বাচনগুলো অত্যন্ত সুষ্ঠু ও শান্তিপুর্ণভাবে অনুষ্ঠিত করেন। নির্বাচনের পূর্বে আলোকবালী ইউনিয়নের বিবদমান দুটি গ্রুপের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে তিন ব্যক্তি নিহত হন। তখন সওগাতুল আলম সদর মডেল থানায় যোগদান করেননি। তিনি ওসি হিসেবে যোগদান করার পর বিষয়টি তার নজরে এলে তিনি নরসিংদী পুলিশ সুপার কাজী আশরাফুল আজীমের পরামর্শে এবং নির্দেশনায় এখানে একটি পুলিশ ক্যাম্প স্থাপন করেন, যার ফলশ্রুতিতে গত এক বছরের মধ্যে এখানে কোনো প্রকার ঝগড়া-বিবাদ সংঘটিত হয়নি। মাত্র এক বছরের মধ্যে নরসিংদী সদর উপজেলার আইনশৃংখলা পরিস্থিতির মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছেন সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সওগাতুল আলম। বর্তমান পরিস্থিতিতে স্বস্তি বোধ করছেন সদর উপজেলার বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠনসহ ব্যবসায়ী এবং সুশিল সমাজের নেতারা। বর্তমানে আইনশৃংখলা পুরোপুরি ভালো।সদা মিষ্টিভাষী এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ছাত্রজীবন থেকে আমি চ্যালেঞ্জকে ভালোবাসি। তাই পুলিশে এসেছি। মানবসেবকের মধ্যে পুলিশ খুবই গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে তিনি বলেন, চাকরিজীবনে যেখানে থাকি, জীবনবাজি রেখে মানুষের সেবা করে যাব। মানুষের জন্য কাজ করে পুলিশ যে জনগণের বন্ধু তা প্রমাণ করতে হবে। তাই জনগণের জন্য কাজ করে যাচ্ছি।মানুষের সেবা করতে পেরে নিজের কাছে অনেক গর্ববোধ মনে হয় উল্লেখ করে ওসি সওগাতুল আলম বলেন, নরসিংদী মডেল থানায় যোগদানের এক বছরের মধ্যে থানায়ও আমূল পরিবর্তন এসেছে। দালাল-টাউটমুক্ত থানা করতে সক্ষম হয়েছি। সাধারণ মানুষ যেন কোনো সমস্যা নিয়ে থানায় এসে সরাসরি অফিসারের সাথে কথা বলে সমস্যা সমাধান করতে পারে সেজন্য সব অফিসারকে নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি। অপরাধী দ্রুত চিহ্নিত করতে এবং চুরি, ডাকাতি, ছিনতাইকারী ধরতে পৌর এলাকার গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলো সিসি ক্যামেরার আওতায় এনে সর্বদা মনিটরিং করা হচ্ছে। দেশের একমাত্র অপরাধমুক্ত শান্তির থানা গড়তে গণমাধ্যমকর্মীসহ সমাজের সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের সহযোগিতা কামনা করেন নরসিংদী মডেল থানার ওসি সওগাতুল আলম।তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, মহান সৃষ্টিকর্তা আমাকে যতদিন বাঁচিয়ে রাখে ততদিন আমি অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করে যাবো। আমার সকল প্রকার চেষ্টা সবসময় থাকবে। আমি সকলের কাছে দোয়া প্রার্থী।
প্রকাশক ও সম্পাদক:মোঃনাজমুল হক মণি
সহকারী সম্পাদক:মোহাম্মদ ইউসুফ
প্রধান কার্যালয়:আশুলিয়া, ঢাকা, বাংলাদেশ
যোগাযোগ: +880 01911121791
© জনগণের বাণী | আইটি সহায়তাঃ সাব্বির আইটি