শিল্পের শহর হিসেবে পরিচিত ও ঘনবসতিপূর্ণ নরসিংদী জেলার মাধবদী পৌর এলাকায় বসবাসকারী নাগরিকদের নানামুখী সমস্যার সমাধান নিয়ে কাজ করছেন পৌর মেয়র হাজী মোঃ মোশারফ হোসেন প্রধান মানিক। এর মধ্যে অবকাঠামোগত উন্নয়ন, রাস্তাঘাট প্রশস্তকরণ, পুরনো ব্রহ্মপুত্র নদ অবৈধ দখল মুক্ত করে সৌন্দর্য বর্ধনের কাজ চলমান রয়েছে।
নৌকা প্রতীক নিয়ে ২০১৬ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি মাধবদী পৌরসভার প্রথম নির্বাচনে বিপুল ভোটে আওয়ামী লীগ থেকে মেয়র নির্বাচিত হন মো. মোশারফ হোসেন প্রধান। দ্বিতীয়বারও তিনি নৌকা প্রতীক নিয়ে বিপুল ভোটে পুনরায় মেয়র নির্বাচিত হন ২০২১ সালের ১৪ মাচ । বর্তমানে তিনি মাধবদীর নগর পিতা। ২০১৬ সালে মাধবদী পৌরসভার প্রথমবার মেয়র পদে নির্বাচিত হয়ে পৌরসভাকে যানজট ও দূষণমুক্ত একটি আধুনিক শহর হিসেবে গড়ে তুলেন তিনি। বিগত দিনগুলোতে পিছিয়ে পড়া অবহেলিত যানজটের শহরকে আধুনিকায়নের লক্ষ্যে প্রথমে পৌর এলাকার ওয়ার্ডভিত্তিক ১০ ফুট সরু রাস্তাগুলোকে সবার সম্পৃক্ততায় ২০ ফুট প্রশস্ত করেন এবং ৮ ইঞ্চি আরসিসি ঢালাইয়ের মাধ্যমে টেকসই রাস্তা নির্মাণ করেন।
মাধবদী পৌরসভা একটি শিল্প এলাকা হিসেবে পরিচিত। এখানে দৈনিক কাপড় লোড-আনলোডের জন্য বড় ট্রাক, লরি, পিকআপ ভ্যান ইত্যাদি পৌর শহরের ভেতরে প্রবেশ করে থাকে । যে কারণে প্রায় সময় পৌর শহরে যানজট সৃষ্টি হতো। তিনি নির্বাচিত হওয়ার পর মাধবদী পৌর শহরের ২০-৩০ ফুট প্রধান রাস্তাগুলো প্রশস্ত করে ৪০ ফুটে উন্নীত করেন এবং রাস্তাগুলো আরসিসি ঢালাইয়ের মাধ্যমে সম্পন্ন করেন।
মাধবদী পৌর শহরে অনেক ছোট, মাঝারি ও ভারী শিল্পকারখানা রয়েছে এসব কারখানার দূষিত বর্জ্য এবং বৃষ্টির পানির জন্য প্রায় সময় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হতো সরু ড্রেনেজ থাকার কারণে। এই জলাবদ্ধতা নিরসনের লক্ষ্যে মাধবদী পৌর শহরের সব ড্রেনের সরু পাইপ পরিবর্তন করে আরসিসি ইউ ড্রেন ব্যবস্থায় উন্নীত করেন পৌর মেয়র । এছাড়া পৌর এলাকায় ডেঙ্গু ও চিকনগুনিয়া বহনকারী এডিস মশা নিধনের লক্ষ্যে ১২টি ওয়ার্ডে মশক নিধন কার্যক্রম পরিচালনা করেন মেয়র।
আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়নের মাধ্যমে মাধবদী পৌরসভার মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর পৌর ভবনের সামনে নরসিংদী জেলায় বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতির সবচেয়ে বড় ম্যুরাল নির্মাণ করেন তিনি। করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় মাধবদী পৌর এলাকার ১২টি ওয়ার্ডে কমিটি গঠনের মাধ্যমে মানুষকে বাড়ির ভেতর থাকা, সামাজিক দূরত্ব মেনে চলা, মাক্স ব্যবহার করা, সাবান বা স্যানিটাইজার দিয়ে হাত পরিষ্কার করার জন্য জনসচেতনতা গড়ে তুলেন মেয়র।
প্রতিটি রাস্তার মোড়ে, মসজিদের সামনে, বাজারে, সরকারি-বেসরকারি অফিসের সামনে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা করা পৌর এলাকার ১২টি ওয়ার্ডে কমিটি গঠনের মাধ্যমে গরিব, মধ্যবিত্ত, নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের কাছে খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দেয়ার জন্য হেলপ লাইন চালু করা এবং যারা লোকলজ্জায় কাউকে বলতে পারেননি হেল্প লাইনের মাধ্যমে রাতের আঁধারে তাদের বাড়িতে খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দিয়েছেন মেয়র। পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ডে জামিয়া ইসলামিয়া হাফিজিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানা, টাটাপাড়া ৬নং ওয়ার্ডে একটি মসজিদ এবং ৯নং ওয়ার্ডের মুসল্লিদের নামাজের জন্য একটি জামে মসজিদ নির্মাণ করেন।
এছাড়া মাধবদী পৌরসভার ১২টি ওয়ার্ডের বিভিন্ন মসজিদ, মন্দির, মাদ্রাসা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিয়মিতভাবে অনুদান প্রদান করে আসছেন তিনি। প্রতিটি ওয়ার্ডে গরিব-অসহায় নিঃস্ব পরিবারকে আর্থিকভাবে সাহায্য প্রদান করাসহ স্বামীহারা পরিবারকে নিয়মিত বিধবা ভাতা, বয়স্ক ব্যক্তিদের জন্য বয়স্ক ভাতা এবং প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য প্রতিবন্ধী ভাতার ব্যবস্থা করেন মেয়র। উল্লেখ্য, মেয়র মোশাররফ হোসেন প্রধান মানিকের পিতা মরহুম আলহাজ্ব লোকমান হোসেন প্রধান ছিলেন বঙ্গবন্ধুর একনিষ্ঠ ভক্ত।
পিতার আদর্শকে ধরে রাখার জন্য ১৯৯০ সালে ছাত্রলীগে যোগদান করেন। পরবর্তী সময়ে নরসিংদী সদর থানা ছাত্রলীগের সিনিয়র সহসভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৪ সালে প্রথম মাধবদী পৌরসভা গঠিত হয়। পৌরসভা গঠন করার পর পৌর ছাত্রলীগের আহবায়ক নির্বাচিত হন। এরপর ২০০৩-২০১৪ সাল পর্যন্ত পৌর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচিত হন।
২০১৪ সালের ৬ ডিসেম্বর মাধবদী পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়ে দলকে সুসংগঠিত করার কাজে আত্মনিয়োগ করেন। মেয়র মোশাররফ হোসেন মানিক ১৯৮৯ সালে মাধবদী এসপি ইনস্টিটিউশন থেকে এসএসসি, ১৯৯১ সালে নরসিংদী সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি ও ১৯৯৩ সালে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন।