নরসিংদীর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) সংবাদ সম্মেলন করে জানিয়েছে, গিয়াস উদ্দিন শেখ ঋণমুক্ত হতে এবং নিজের চাচাতো ভাইকে ফাঁসাতে স্ত্রী ও দুই সন্তানকে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন।আজ মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে নিজের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এ তথ্য জানান পিবিআই নরসিংদীর পুলিশ সুপার (এসপি) এনায়েত হোসেন মান্নান।সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বিভিন্ন এনজিও ও আত্মীয়-স্বজনের কাছ থেকে স্ত্রীর নামে প্রায় ১০ লাখ টাকা ঋণ নেন গিয়াস উদ্দিন শেখ। সুদে-আসলে তা ১২ লাখ টাকার ওপর দাঁড়ায়।ওই ঋণের বিপরীতে প্রতি মাসে কিস্তি আসে ২২ হাজার টাকার কাছাকাছি।এ নিয়ে চাপে পড়ে সম্প্রতি বাড়ির আঙিনা থেকে গিয়াস উদ্দিন দুটি গাছ কাটেন। তবে প্রতিবেশী এক চাচাতো ভাইয়ের বাধার কারণে তিনি তা বিক্রি করতে পারেননি।এর মধ্যে তিনি একজনের কাছ শুনতে পান, ঋণগ্রহীতা মারা গেলে ঋণের টাকা মওকুফ হয়ে যায়।এরপর তিনি ঋণমুক্ত হতে এবং ওই চাচাত ভাইকে ফাঁসাতে নিজেই স্ত্রীকে হত্যা করেন। সন্তানেরা কাউকে বলে দিতে পারে, সেই ভয় থেকে তাদেরও হত্যা করেন তিনি।এর আগে গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় নরসিংদীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রাকিবুল হকের আদালতে স্ত্রী ও দুই সন্তানকে হত্যার দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন গিয়াস উদ্দিন শেখ।জবানবন্দি শেষে তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়।পিবিআইয়ের হাতে আটক গৃহকর্তা স্ত্রী ও দুই সন্তানকে হত্যার কথা স্বীকার করলেন।নরসিংদীর বেলাবতে স্ত্রী ও দুই সন্তানকে হত্যার অভিযোগে গিয়াস উদ্দিন শেখকে আটক করেছে পিবিআই।গিয়াস উদ্দিন শেখ বেলাব উপজেলার পাটুলী ইউনিয়নের বাবলা গ্রামের বাসিন্দা। তিনি গাজীপুরের কাপাসিয়ার আড়াল এলাকার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে টেন্ডারের মাধ্যমে রঙের কাজ করেন।গত রোববার বেলা ১১টার দিকে বেলাব উপজেলার বাবলা গ্রামের বাড়ি থেকে গিয়াস উদ্দিন শেখের স্ত্রী রাহিমা বেগম (৩৫), দুই সন্তান রাব্বি শেখ (১৩) ও রাকিবা শেখের (৭) লাশ উদ্ধার করা হয়। রাহিমার ছোট ভাই মো. মোশারফ হোসেন বাদী হয়ে বেলাব থানায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে মামলা করেন।এর মধ্যে মামলাটি পিবিআইয়ে হস্তান্তর করা হয়েছে।হত্যার দায় স্বীকার করলেও মামলায় আসামি করা হয়নি গিয়াস উদ্দিনকে।নরসিংদীর বেলাবতে স্ত্রী ও দুই সন্তানকে হত্যার অভিযোগে গিয়াস উদ্দিন শেখকে গতকাল রোববার আটক করে পিবিআই লাশ উদ্ধারের চার ঘণ্টা পর গিয়াস উদ্দিন শেখকে আটক করে পিবিআই।ঘটনার সময় তিনি গাজীপুরে অবস্থান করছিলেন বলে দাবি করলেও তাঁর ব্যবহৃত মুঠোফোন নম্বর ট্র্যাক করে ঘটনাস্থলে থাকার সত্যতা পায় পিবিআই।পরে তিনি পিবিআইয়ের জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন এবং হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা দেন।