1. admin@jonogonerbani.com : admin :
সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৪:৫১ পূর্বাহ্ন

হাঁক-ডাক নেই,লেইস ফিতা লেইস

মোঃ নাজমুল হক মণি
  • প্রকাশিতঃ সোমবার, ২০ মে, ২০২৪

ডিজিটাল স্মার্ট যুগে হারিয়ে যাচ্ছে লেইস ফিতা লেইস। গ্রামে এখন হাঁক-ডাক নেই লেইস ফিতাওয়ালার ‘লেইস ফিতা লেইস’। দিন যায় তবুও কথা থাকে। জীবিকার তাগিদে পথে পথে ছুটে চলা লেইস ফিতাওয়ালারা হারিয়ে যাচ্ছেন। লেইস ফিতাওয়ালারা প্রতিদিন লেইস ফিতা, রঙিন সুতা, রঙিন টিপ, রঙিন হাতের চুড়ি, আলতা, স্নো, পাউডার, সাবান, তেল, আয়না, চিরুনি, সুগন্ধি ইত্যাদি নিয়ে গ্রামে গ্রামে বিক্রি করার জন্য ঘুরতেন। সেই লেইস ফিতাওয়ালাদের এখন আর আগের মতো দেখা মেলে না। শহরের যান্ত্রিকতার ভিড়ে হারিয়ে যাচ্ছে লেইস ফিতাওয়ালারা। তবে মফস্বল বা গ্রামের পথে মাঝে মধ্যে দেখা যায় তাদের।

আধুনিক সভ্যতা কেড়ে নিয়েছে সেই লেইস ফিতাওয়ালাদের বিচরণ। তাই সচরাচর আর চোখে পড়ে না কাগজের কার্টুনের উপর সাদা বা লাল কাপড় পেঁচিয়ে পুটলি কাঁধে ঝুলিয়ে আরেক হাতে কাঁচের ঢাকনা ওয়ালা বক্স বহনকারী লেইস ফিতাওয়ালাদের। একটা সময় সকাল -দুপুরের পর যখন নারীরা মধ্যাহ্নভোজ ছেড়ে উঠানের আড্ডায় জন্য প্রস্তত, তখন রাস্তা দিয়ে হেঁটে যেতেন লেইস ফিতাওয়ালারা। তাদের সে ডাক শুনে খুকুমণিরা বায়না ধরতো চুড়ি বা নেইল-পলিশের। নারীরা বরাবরেই প্রসাধনীতে প্রিয়, খুকুমণিদের আবদারে মায়েরও দেখতে ইচ্ছা করত কি আছে ফেরিওয়ালার বাক্সে। এটা থেকে ওটা করে নারীরা কিনে নিতেন স্নো ক্রিম বা কদুর তেল, খুকুমনির কাঁধ ঝোলানো চুলে বেদে দেওয়া হতো লাল টুকটুকে ফিতা।

এখন বাক্স বন্দি ব্যবসার চেয়ে অনেকে দোকান খুলে কিংবা অন্য ব্যবসার দিকে ঝুঁকে গেছেন। ফেরি করে লাভবান হওয়া যায় না বলে ব্যবসায়ীরা এই ব্যবসা থেকে আগ্রহ হারাচ্ছেন। তাই তাদের আর দেখা মেলেনা। খুকুমনিরাও আজকাল আর লাল ফিতার বায়না ধরে না।

নরসিংদী সদর এলাকায় লেইস ফিতাওয়ালা নজুমদ্দিন জানান, এখন আর আগের মতো গ্রামে কেউ চুরি ফিতা কেনে না। মার্কেটে সব রকম প্রসাধনী সামগ্রী আর সাজাসজ্জর জিনিস পাওয়া যায়। এখন সবাই মার্কেটে যান তারপরও নজুমদ্দিনের কন্ঠে শোনা যায় লেস ফিতা, এই লেস ফিতার ডাক। তিনি তার বাবার ব্যবসা ছোটবেলার স্মৃতিচারণ করে ।

ডাংগা এলাকার ডালিয়া বেগম বলেন, ছোটবেলার লেস ফিতাওয়ালাদের কাছ থেকে জিনিস কিনতাম এখন আর তাদের দেখা যায় না। সবাই একসঙ্গে এটা সেটা দেখে অনেক মজা করে চুড়ি-ফিতা নেইলপালিশ কিনতাম। আগের দিনগুলো সত্যিই অনেক মজার ছিল।

ঘোড়াশাল পৌর এলাকার সাজেদা আক্তার বলেন, ছোটবেলায় বিকালে যখন ঘুমিয়ে পড়তাম ফেরিওয়ালার লেইস ফিতা লেইস ডাক শুনে উঠে যেতাম। সঙ্গে সঙ্গেই মায়ের কাছে বায়না ধরতাম লাল ফিতা কিনে দেওয়ার জন্য। সেই লাল ফিতা মাথায় বেণী করে পেচিয়ে চারদিকে ঘুরে বেড়াতাম। সেই দিনগুলি সত্যিই অসাধারণ ছিল। এখন আর গ্রামের বাড়িতে বেশি একটা যাওয়া হয়না তাই হয়তো আর তাদের দেখি না।

আরো খবর দেখুন এখানে
© জনগণের বাণী | আইটি সহায়তাঃ সাব্বির আইটি
Developed By Bongshai IT