নরসিংদীর রায়পুরায় লুৎফা বেগম (২৫) নামে ৭ মাসের অন্তঃসত্ত্বা এক গৃহবধূকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ ওঠেছে শ্বশুর বাড়ির লোকদের বিরুদ্ধে। শনিবার দিবাগত রাত আনুমানিক ১১টায় উপজেলার মহেষপুর ইউনিয়নের বেগমাবাদ থানাকান্দি গ্রামের মোল্লা বাড়ীতে এ ঘটনা ঘটে।অভিযুক্তরা হলো, নিহত লুৎফা বেগমের স্বামী নুরুজ্জামান মিয়া (৩৩) এবং শ্বাশুড়ি কালা বেগম (৫০)।নিহত নারী বেগমাবাদ থানাকান্দি গ্রামের বিল্লাল মিয়ার ছেলে নুরুজ্জামানের স্ত্রী ও একই উপজেলার মুছাপুর ইউনিয়নের মতিউর নগর গ্রামের একরাম হোসেনের মেয়ে। তার তিন বছরের এক কন্যা শিশু রয়েছে। তিনি ৭ মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন বলে স্বজনদের সূত্রে জানা গেছে।পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নিহত ওই নারীর সাথে ৫ বছর পূর্বে নুরুজ্জামানের বিয়ে হয়। পরে তাদের সংসারে কন্যা সন্তান জন্ম গ্রহণের পর নুরুজ্জামান প্রবাসে (ওমান) পাড়ি জমান। প্রবাস জীবন শেষে ৮ মাস পূর্বে বাড়ি ফিরেন স্বামী। তিনি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ভাড়ায় চালিয়ে সংসার চালিয়ে আসছিলেন। স্ত্রী অন্তসত্ত্বা হওয়ার পরও বিভিন্ন সময় বাবার বাড়ি থেকে টাকা আনার জন্য নির্যাতন চালাতো স্বামী ও তার পরিবার।শনিবার দিবাগত রাতে ওই নারী তার স্বামী কর্তৃক নির্যাতনের শিকার হয়। এই খবর মুঠোফোনে মাকে জানাতে থাকলে তার স্বামী মুঠোফোন কেড়ে নিয়ে বন্ধ করে দেয়। পরে নিহতের স্বামী নিজেই রাত আনুমানিক ১১টায় শশুরবাড়ী ফোন করে নিহতের খবর দেয়। আশপাশের লোকজন এ ঘটনা জানার পূর্বেই খাটের ওপর মরদেহ ফেলে রেখে পালিয়ে যায় স্বামী। স্থানীয়দের মাঝে এ ঘটনা জানাজানি হলে পালিয়ে যাওয়া স্বামীকে খুঁজতে থাকেন। পরে স্থানীয়রা পাশের এলাকা মানিকনগর থেকে তাকে আটক করে। এসময় পুলিশে খবর দিলে রাত ১২ টায় মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি শেষে ময়নাতদন্তের জন্য নরসিংদী সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য অভিযুক্ত স্বামীকে আটক করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।নিহতের মা জাহেদা বেগম জানান, 'সর্বশেষ রাতে মেয়ে ফোন করে বলে মা গো আমারে মারতাছে। পরে জামাইকে বলি, কি গো তুমি হেরে কেরে মারতাছো । সে বলে মারোম অই। মেয়ের কথা শুনতাছি মা গো আমারে মারতাছে, পেটে লাথি মারছে। চিৎকার করে নির্যাতনের কথা জানায়। মেয়েকে স্বামী শাশুড়ী পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করেছে। পরে রাতেই নুরুজ্জামান নিজে ফোন করে লুৎফা নিহতের খবর জানায়। আমি আমার মেয়ে হত্যাকারীদের ফাঁসি চাই।'নিহতের বাবা একরামুল হোসেন জানান, সন্ধ্যায় তার মায়ের নিকট ফোন করে নির্যাতনের কথা জানায় মেয়ে। পরে জামাই মুঠোফোন কেড়ে নিয়ে বন্ধ করে রাখে। পরে স্বামী নুরুজ্জামান ফোন করে নিহতের খবর দেয়। গর্ভবতী মেয়েটিকে খুব কষ্ট দিয়ে মেরে ফেলেছে।রায়পুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো আজিজুর রহমান জানান, খবর পেয়ে রাতেই মরদেহটি উদ্ধার করে মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। এ বিষয়ে নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ ও ময়নাতদন্ত সাপেক্ষে আইনগত পদক্ষেপ নেয়া হবে।
প্রকাশক ও সম্পাদক:মোঃনাজমুল হক মণি
সহকারী সম্পাদক:মোহাম্মদ ইউসুফ
প্রধান কার্যালয়:আশুলিয়া, ঢাকা, বাংলাদেশ
যোগাযোগ: +880 01911121791
© জনগণের বাণী | আইটি সহায়তাঃ সাব্বির আইটি